প্রথম রাজধানী:
মেহেরপুরের গাংনীতে প্রেমিকের খাওয়ানো হারপিকে নিহত সুম্মা খাতুনের লাশ ময়না তদন্ত শেষে গ্রাম্য কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। এদিকে সুম্মা খাতুনকে হত্যার অভিযোগ তুলে তার বাবা রেজাউল হক আজ সোমবার সকালে বাদি হয়ে গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। সুম্মা গাংনী উপজেলার সহড়াতলা গ্রামের রেজাউল হকের কণ্যা ও হাড়াভাঙ্গা এইসএসকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্রী।
উল্লেখ্য মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সহড়াতলা প্রেমিক সেলিম রেজা স্বাধীন(১৭) এর জোর করে হারপিক খাওয়ায়। দীর্ঘ দুই মাস জীবনের সাথে যুদ্ধ করে হারমেনে অবশেষে ঢাকা শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনিষ্টিটিউট এ্যান্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সকালে মুত্যু হয় সুম্মার। রবিবার সকালে সুম্মার মৃত্যু হলে সন্ধ্যার দিকে মরদেহ গ্রামে এসে পৌঁছায়। সুম্মার মৃত্যুতে পরিবার ও গ্রাম জুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া।
এদিকে অসুস্থ থাকা কালিন সুম্মা খাতুন এক ভিডিও বার্তায় জানান, সেদিন আমাদের বাড়িতে কেউ ছিলোনা। আমি একাছিলাম। আমার প্রেমিক স্বাধীন আমাদের বাড়িতে এস বলে পরিবার আমাদের মেনে নিচ্ছেনা। আমরা দুজন একসাথে আত্মহত্যা করবো। এইবলে সে আমাকে জোর করে হারপিক খাওয়ায়। এর পর আমি জ¦ালা যন্ত্রনায় চিৎকার দিলে স্বাধীন আমাকে ফেলে পালিয়ে যায়। আমি অনেক দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছি কিন্তু স্বাধীন আমার সাথে কোন যোগাযোগ রাখেনি। আমি এর বিচার চাই।
সুম্মার পরিবার জানান একই গ্রামের সৌদি প্রাবাসী সাইদুর রহমানের স্কুল পড়ুয়া ছেলে স্বাধীনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সুম্মা খাতুনের। কয়েক মাস যেতে না যেতেই সম্পর্কের কথা উভয় পরিবারের মধ্যে জানাজানি হয়। কয়েকবার স্বাধীনের পরিবারকে বিয়ে প্রস্তাব দেয় সুম্মার পরিবার। বিয়ের বিষয়টি স্বাধীনের পরিবার মেনে নেয়নি। এর পর গত ২২/৫/২০২২ ইং তারিখে স্বাধীন সুম্মার বাড়ি যেয়ে সুম্মাকে জোর করে হারপিক পান করায়। পরে পরিবারের লোক জন তাকে উদ্ধার করে করমদি সন্ধানী হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা নিয়ে অবস্থার আরো অবনতি হলে ঢাকা শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনিষ্টিটিউট এ্যান্ড হাসপাতালে রেফার করে কর্তব্যরত চিকিৎসক।
সুম্মার পিতা রেজাউল হক জানায়, আমার মেয়ের মৃত্যু জন্য স্বাধীনই দায়ী দীর্ঘদিন চিকিৎসা করতে গিয়ে আমি পথের ফকির হয়ে গেছি। তবুও আমার মেয়েকে বাঁচিয়ে রাখতে পারলামনা। একথা জানাতেই মুর্ছা যায় সুম্মার পিতা।
এদিকে স্বাধীন ও তার পরিবারের লোকজন গ্রামছেড়ে পালিয়েছে।একারণে স্বাধীনের পরিবারের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাকের সাথে মোবাইল ফোনে জানান, সুম্মা খাতুনের বাবা রেজাউল হক আজ সোমবার সকালে বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে যার মামলা নং ১ তারিখ ১আগস্ট২০২২। তিনি আরো বলেন লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।