মুহম্মদ রবীউল আলম:
‘তোমার কপালে টিপ, মনে হয় সান্ধ্য-প্রদীপ’- রোমান্টিক এই কবিতা পংক্তি কবি তারিক-উল ইসলামের।- এই কবির জন্মদিন আজ।
তার আরেকটি কবিতার পংক্তি- ‘ পাখিরা হত্যা জানে না, সীমানা জানে না/ হন্তারক মানুষই, ডানার গন্ধে তারা খোঁজে কার্তুজের গন্ধ।’।
আরেকটি পংক্তি- ‘বিষাদ নগরী নিষাদ ছুঁয়েছে। তোমরা যাও আমি যাবো না’
আরও একটি- ‘বিক্ষত দিন তবু উড্ডীন/ উজ্জ্বল পতাকা/ হারবে না কখনও তুমি/ স্বদেশ তোমার মা।’
কেবলই মুগ্ধতা ছড়ায় তার কবিতা।
কবি তারিক-উল ইসলাম ১৯৬১ সালের ১৭ জানুয়ারি মেহেরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। আজ তার ৬১তম জন্মদিন। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: সে এক দ্বিধা, আয় চেনা পথ রথ আমার, কী কহ পাখি। প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে আরও দুটি কাব্যগ্রন্থ।
তার পেশা সাংবাদিকতা। ঢাকায় তিনি প্রায় চার দশক ধরে সাংবাদিকতা করছেন।
তার বাবা ভাষাসৈনিক আমানুল ইসলাম ও মা শামসুন নাহার। তার সহধর্মিনী ফাতিমা জান্নাত বেলী।বড়ছেলে হাসনাত আসিফ কুশল, ছোটছেলে হাসনাত আবীর অঙ্গন। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে তারিক-উল ইসলামের লেখাপড়া মেহেরপুর শহর ও তার জন্মগ্রাম শালিকায়। তিনি ১৯৭১ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত মেহেরপুর গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের ছাত্র ছিলেন। তার কলেজজীবন অতিবাহিত হয় যশোরে। পরে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় সম্মানসহ মাস্টার্স করেন। তার লেখালেখি শুরু স্কুল জীবন অতিবাহিত হওয়ার পর। রাজশাহীতেই শুরু তার সাংবাদিকতা। ১৯৮৬ থেকে এ পর্যন্ত ঢাকায় সুনামের সঙ্গে সাংবাদিকতা করছেন।
কলেজজীবনে তিনি রক্তপলাশ, সেইদিন সেই সূর্য, অনিয়ম, আলাপ ও মাদল নামে পাঁচটি লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আশির দশকের প্রধান কবিতা সংগঠন ‘শব্দায়ন’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক । কলেজজীবন থেকেই তার লেখা কবিতা বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিন ও জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (রাবিসাস) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি সেখান থেকে অবরুদ্ধ সময় নামে লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা করেন।
তারিক-উল ইসলাম ১৯৮৩ থেকে-৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি রাজশাহীর দৈনিক বার্তায় বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ছিলেন। ১৯৮৬ সালে তিনি ঢাকায় এসে সাহিত্য পত্রিকা মাসিক এ দেশ এ কাল-এর সহকারী সম্পাদক হন। ১৯৮৭ সালে দৈনিক খবরের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে সাংবাদিকতার নতুন অধ্যায় শুরু করেন। ১৯৯১ সালে দৈনিক রূপালীর সিনিয়র রিপোর্টার হন। ১৯৯৩ সালে সাপ্তাহিক দিবানিশি এবং পাক্ষিক কিংবদন্তির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হন। ১৯৯৭ সালে দৈনিক বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার হন। সরকারি পত্রিকা দৈনিক বাংলা বন্ধ হয়ে গেলে ১৯৯৭ সালে দৈনিক প্রভাতের নির্বাহী ও বার্তা সম্পাদক হন। এরপর ২০০২ সালে সাপ্তাহিক রোববারের নির্বাহী সম্পাদক হন। ২০০৪ -২০১০ পর্যন্ত দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র-সাব এডিটরের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সাল থেকে দৈনিক সকালের খবরের যুগ্ম বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত তিনি দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি দৈনিক জবাবদিহির নির্বাহী ও বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। শিগগিরই তিনি নতুন একটি জাতীয় দৈনিকে গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগ দিতে যাচ্ছেন।
তিনি জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাব এডিটর্স কাউন্সিলের (ডিএসইসি) সদস্য । তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা কম হলেও আত্মপ্রচারবিমুখ এই কবির কবিতা পাঠকমহলে সমাদৃত।
কবি তারিক-উল ইসলাম আমার স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সহপাঠী, বন্ধু। জন্মদিনে তাকে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা।
(লেখা ও ছবি: সম্পাদক সাপ্তাহিক পলাশি ও গ্রেটার কুষ্টিয়া নিউজ)