মেহেরপুর প্রতিনিধিঃ
মেহেরপুরে এক গৃহবধুর শ্লীলতাহানির ঘটনায় দেড় লাখ টাকায় মিমাংসা করেছে স্থানীয় মাতবররা। ক্ষতিপূরন হিসেবে দেড় লাখ টাকা দিতে হয়েছে অভিযুক্ত নাজমুল শেখ (২৮) নামের এক যুবককে।
মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে গত ১৫ মার্চ এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত যুবক নাজমুল শেখ একই গ্রামের উপাজেল শেখ এর ছেলে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে পুলিশকেও টাকা দিতে হয়েছে বলে জানান নাজমুল শেখ এর পিতা উপাজেল শেখ। ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধুর স্বামী জানান, গত ১১ মার্চ সকালে প্রতিবেশি উপাজেল শেখ এর ছেলে নাজমুল শেখ আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। এসময় আমি দেখে ফেলায় আমার উপর আক্রমন করে নাজমুল। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আমার স্ত্রীর মাথায় আঘাত লাগে। এতে তার মাথায় ৫টি সেলাই দিতে হয়েছে। পরে স্থানীয় মাতবর সাজেদুল গাজী, হাবিবুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন মিলে আপোস মিমাংসা করে। মিমাংসায় দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয় নাজমুলকে। মামালা কেন করেননি জানতে চাইলে তিনি জানান, স্থানীয়দের চাপে।
জরিমানা দেওয়ার বিষয়টি স্বিকার করে নাজমুল এর পিতা উপাজেল শেখ জানান, পেঁয়াজ বিক্রির দেড় লাখ টাকা মাতবরদের চাপে দিতে হয়েছে। মোনাখালি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফার কথা মত আপোস মিমাংসা হয়েছে। এছাড়াও ঘটনার দিন মুজিবনগর থানা পুলিশ বাড়িতে আসলে তাদেরও দিতে হয়েছে ৮ হাজার টাকা। উভয় পক্ষ মিলে পার্শ্ববতি বিশ্বনাথপুর পুলিশ ক্যাম্পকেও দিতে হয়েছে ৫ হাজার টাকা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম জানান, এমন ঘটনা হয়েছে এবং টাকা লেনদেন হয়েছে বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে বিশ্বনাথপুর পুলিশ ক্যাম্পের আইসি আযম বিশ্বাস টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বিকার করে বলেন, দেড় লাখ টাকায় আপোস হয়েছে শুনেছি কিন্তু আমরা কোন টাকা নিইনি।
স্থানীয় মাতবর হাবিবুর রহমান ও সাজেদুল গাজী জানান, ওদের পারিবারিক ঘটনা। আমরা শুধুমাত্র আপোস মিমাংসায় উপস্থিত ছিলাম। টাকা লেনদেন এর বিষয়ে কিছু জানিনা। একই কথা বলেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফা।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদি রাসেল বলেন, এ সংক্রান্ত কোন লিখিত অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। থানা পুলিশের নামে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।