মেহেরপুর প্রতিনিধি:
মাদকের মামলায় শিশু আসামি আলফাজ আহমেদ ওরফে সাগরকে ১ বছরের জন্য প্রবেশনে রাখার আদেশ দিয়েছে আদালত। মেহেরপুর শিশু আদালতের বিচারক মোঃ তহিদুল ইসলাম বুধবার বিকালে এ আদেশ দেন।
আদেশে সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদুল আলমের কাছে সাগরকে ১ বছরের প্রবেশন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই এক বছরের মধ্যে প্রবেশনকালে আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশু আলফাজ আহমেদ ওরফে সাগর প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থাকবেন এবং তার অবস্থান ও দৈনন্দিন জীবনযাপন সম্পর্কে প্রবেশন অফিসার কে অবহিত করবেন। প্রবেশনকালে তাকে সকল ধরনের অপরাধ সহ রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
আদালতে তলব অনুযায়ী আদালতে উপস্থিত থাকবেন। তিনি সমাজের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে ভাল আচরণ করবেন। মা বাবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন। এবং তাদের সেবাযত্নে মনোযোগী হবেন।এবং তাদের আদেশ নির্দেশ মেনে চলবেন। ধূমপান ও মাদক সেবন করা,মাদক থেকে বিরত থাকা, মাদক বহন সংরক্ষণ সরবরাহ ও বিক্রয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট হবে না (এ বিষয়ে সহকারী পরিচালক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় মেহেরপুর বিশেষ তাদারকি মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করবেন)। লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে হবে। ভাল লেখাপড়ায় প্রমাণ হিসেবে প্রবেশনের মেয়াদ শেষে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক প্রদত্ত প্রবেশপত্র আদালতে দাখিল করতে হবে। “বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী” ” আমার দেখা নয়া চীন” বই দুটি পড়াসহ ১৩ টি শর্ত দেয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে মেহেরপুর শহরে থানাপাড়ার সাবেদুদ্দোজা আলীর ছেলে আলফাজ আহমেদ ওরফে সাগর কে ৪ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারের অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬(১) তারার টেবিলের ১০ (ক) নং ক্রমিকে মেহেরপুর সদর থানায় এই মামলার এজাহার দায়ের করা হয়। মামলাটি প্রমাণের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ ৪ জন সাক্ষীকে আদালতে পরীক্ষা করেন। সাক্ষীরা প্রত্যেকে অভিযুক্ত আলফাজ আহমেদ ওরফে সাগর এর নিকট থেকে ৪ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার এর সমর্থনে সাক্ষ্য প্রদান করেন। আসামি সাগর স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে তার দোষ স্বীকার করেন। এবং প্রবেশনে মুক্তি পাওয়ার আবেদন করেন।
আদালত সাগরের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে শিশু আইন ২০১৮ এর ৩৬ (১) ধারার টেবিলের ৩৬(১) দোষী সাব্যস্ত করে ২০১৩ এর ৩৪(১) ধারার বিধান অনুযায়ী এক বছরের আটকাদেশ প্রদান করেন।যেহেতু আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশু আলফাজ আহমেদ ওরফে সাগেরর বর্তমান বয়স ১৭ বছর। এবং সে একজন ছাত্র, সেহেতু তার বয়স, লেখাপড়া, আর্থ-সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা অপরাধের গুরুত্ব ও প্রকৃতি এবং অপরাধ সংঘটনের ইতোপূর্বের রেকর্ড বিবেচনায় তার প্রতি আরোপিত আটকাদেশ স্থগিত রেখে তাকে প্রবেশন এর আওতায় সংশোধনের সুযোগ দিয়ে সুনাগরিক হিসেবে বেড়ে ওঠার সুযোগ প্রদানের লক্ষ্যে দা প্রবেশন অফ অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স,১৯৬০,এর ৫ ধারার বিধান মোতাবেক প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে উল্লেখিত শর্তে প্রবেশনে মুক্তি প্রদান করা হয়।