ডি এম মকিদঃ
আজ পলাশী দিবস। স্বাধীন বাংলার নবাব ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে পরাজিত হয়। ১৯০ বছরের জন্য বাংলা তার স্বাধীনতা হারায়। সেই পরম্পরায় প্রতি বছর ২৩ জুন দিনটি পলাশী দিবস হিসাবে পালিত হয়ে থাকে। ১৭৫৭ সালের এইদিনে মুর্শিদাবাদ জেলার পলাশী প্রান্তরে রবার্ট ক্লাইভ, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়, মীরজাফর, জগৎ শেঠ, রায়দুর্লভ, ইয়ার লতিফ চক্র এই কালো দিবসের জন্ম দেয়।
চরম দুর্ভাগ্যকে সঙ্গে করে জন্মেছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলা।অপরিমিত ঐশ্বর্য আর বিলাসে কাটে তাঁর বাল্যজীবন। সিরাজ ছিলেন চরম ইংরেজ বিদ্বেষী। ইংরেজ সরকারি কর্মী আর সমসাময়িক ইংরেজ ঐতিহাসিকেরা এই মানুষটিকে নারীলোলুপ এক নৃশংস দানবিক চরিত্রে রূপান্তরিত করেছিলেন। সেইসাথে দেশীয় ঐতিহাসিকরাও গলা মেলান। ঐতিহাসিক অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় মহাশয় সুদীর্ঘ অনুসন্ধানের পর নবাব সিরাজুদ্দৌলাকে অন্ধকারের কালিমামুক্ত করেন। বাঙালি নতুন করে চিনতে পারে তাদের প্রিয় নবাবকে। জানতে পারে ইংরেজ প্রচারিত ‘অন্ধকুপ হত্যা’র ঘটনা সম্পূর্ণ কাল্পনিক —–পলাশীর প্রান্তরে যুদ্ধের প্রহসন—-রাজা কৃষ্ণচন্দ্র–মীরজাফর–জগৎ শেঠের ষড়যন্ত্রে তরুণ নবাবের করুণ পরিনতির ঘটনা। নবাব আলিবর্দির আদরের দৌহিত্র এদেশ থেকে বিদেশি বনিকদের আধিপত্য খর্ব করতে গিয়ে নিজের জীবনকে বিপন্ন করেছিলেন কীভাবে—আজও বাংলার আপামর মানুষের কাছে তার পাঠযোগ্যতা হারায়নি।