মঙ্গলবার ২২ জুন
গাংনী প্রতিনিধি :
জলাবদ্ধতায় বিপর্যয় নেমে এসেছিল মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চোখতোলা নামক মাঠের ধান ও পাট ক্ষেতের। অবশেষে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পুকুরের বাঁধ কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছ্।
এবছর বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই প্রবল ও অতিবৃষ্টির ফলে মাঠ ঘাট পানিতে থৈ থৈ, একাকার। অতিরিক্ত পানির কারণে চোখতোলা নামক মাঠে হাজার হাজার বিঘা পাট ও ধান ক্ষেত বিনষ্ট হতে চলেছে। অনেকের রোপা আমন ধানের ক্ষেত এক কোমর পানির নিচে।
পাটের জমিতে দীর্ঘ সময় পানি জমে থাকলে পাটের গোড়ায় শিকড় গজিয়ে পাটের বর্ধন বাধাগ্রস্থ হয়। গাংনী উপজেলার ধর্মচাকী, ভোমরদহ, জোড়পুকুরিয়া গ্রামের কৃষকদের কয়েকশ একর জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছ্। উক্ত মাঠের পানি নিষ্কাশনের জন্য চোখতোলা মাঠে পাশাপাশি ২টি ব্রিজ কালভার্ট থাকলেও এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে ব্রিজের মুখে একাধিক পুকুর খনন করে মাঠের পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছিলেন।
পাট ও ধান ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ার কারণে এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে গাংনী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মৌসুমী খানম স্ব-শরীরে চোখতোলা নামক মাঠে তদন্ত করে পানি নিষÍাশনের জন্য পুকুরের পাড় কর্তন করতে নির্দেশনা প্রদান করেন। এসময় গাংনী থানা পুলিশের এসআই তৌহিদের নেতৃত্বে পুলিশের একটিদল সহযোগিতা করেন। মাঠে জলাবদ্ধতায় এবং গ্রামে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় চরম নাকাল অবস্থার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছে এলাকাবাসী। অনেক বাড়ির উঠানে পানি জমে কর্দমাক্ত হয়েছে।
এব্যাপারে গ্রামের ভুক্তভোগী নাসিরউদ্দীন জানান, প্রতি বছরই আমাদের এই মাঠে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। প্রভাব বিস্তার করে সবার কথা অগ্রাহ্য করে পুকুরের পাড়ে পানি আটকিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করেছে। আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিতে ইউএনও বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আমরা খুব খুশী হয়েছি। গাংনী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মৌসুমী খানমের নির্দেশে আমরা গ্রামের লোকজন সমন্বিতভাবে খরচ দিয়ে এসবেটর দিয়ে পুকুরের পাড় কেটে পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য সাহাবুদ্দীন আহমেদ জানান, বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও পানি নিষ্কাশনে কোন স্থায়ী ব্যবস্থায় নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
একারণে জনমনে প্রচন্ড ক্ষোভ বিরাজ করছে। বারবারই এমপি , উপজেলা নিবার্হী অফিসার, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সড়ক মেরামত ও পানি নিস্কাশনের আশ্বাস দিয়েও কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। দীর্ঘস্থায়ী ভাবে জলাবদ্ধতা দূর করতে কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান তিনি। গাংনী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মৌসুমী খানম বলেন,ফসল রক্ষায় দ্রুত সময়ের মধ্যে জলাবদ্ধতা দূর করণে পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ব্রিজের সম্মুখে কারও কোন পুকুর পাড় রাখা হবে না। গ্রামের লোকজনকে বলা হয়েছে পানি নিষ্কাশনে যা যা করা দরকার সেটা করা হবে। পানি নিষ্কাশনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পূর্ববর্তী খবর