মেহেরপুর প্রতিনিধি :
মেহেরপুরের প্রতিটি ইট ভাটাতেই দেওয়া হয়েছে আগুন। আর এই ভাটা গুলোর অধিকাংশই জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করছে কাঠ। মেহেরপুর জেলায় ১০৩টি ইটভাটা রয়েছে, যার মধ্যে ১৮টি হাওয়া (কয়লার) ভাটা। এই ১৮টি হাওয়া ভাটাতেও আবার প্রায় ৩০০-৪০০মন কাঠ ব্যবহার করা হয়। যদিও জেলা প্রসাশনের দাবি শুধুমাত্র ভাটাতে আগুন জ্বালানোর জন্য অল্প পরিমান কাঠ পোড়ানোর জন্য মৌখিক ভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তবে ১০৩ টি ভাটার একটিরও নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকার কারণে জেলা প্রশাসন থেকে লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। প্রতিটি ভাটা মালিক ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্সেই ইট তৈরি ও বিক্রি করছেন।
সামাজিক বনায়ন নার্সারি ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র মেহেরপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাফর উল্লাহ জানান, প্রতি মৌসুমে মেহেরপুরে শুধুমাত্র ইটভাটায় পোড়ানো হয় প্রায় ৯০ লাখ টন কাঠ। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩-এর ১৬ ধারায় বলা আছে, ভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে কাঠ ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদন্ড বা তিন লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ড হতে পারে। তবে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তরের। তারপরও আমরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভাটা মালিকদের কাঠ পোড়াতে নিষেধ করেছি।
ভাটা মালিকদের দাবি, সরকারের নীতিমালা মেনে ভাটা স্থাপনে তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু কোনো অনুমোদন পাচ্ছেন না বছরের পর বছর। সরকারিভাবে বিভিন্ন দিবস পালনের ব্যয় মেটাতে এসব ভাটা মালিক সমিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে মালিকদের দাবি। অবৈধ হলেও ভাটাগুলো থেকে প্রতিবছর রাজস্ব আদায়েও ভ’মিকা রাখছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে এসব ভাটা থেকে চার কোটি ৬৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।
জেলা ভাটা মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রসুল বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পেতে, যেসব শর্ত পালন করতে হয়,তার কোনটিই ভাটাগুলো পালন করতে পারেনা। তাই ভাটা গুলোকে ছাড়পত্র দিতে পারছে না। আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে অনুরোধ করবো, উন্নয়নমূলক কাজের অংশিদার হিসেবে শর্ত কিছুটা সীথিল করে ভাটাগুলোকে যেন ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান জানান, নীতিমালা না মেনে স্থাপিত ভাটাগুলোতে অভিযান চালিয়ে বন্ধ করা হলে ইটের দাম বেড়ে যাবে। ব্যাহত হবে উন্নয়নমূলক কাজ। ইট ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে মানুষের। মানবিক কারণেই কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়।
পূর্ববর্তী খবর