মেহেরপুর প্রতিনিধি:
মেহেরপুরে ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইন জুয়া। খেলায় একটি পক্ষের ভাগ্য পরিবর্তন হলেও নিঃশ্ব হচ্ছে অধিকাংশই। খুব সহজেই একাউন্ট খুলে ওয়ান এক্স বেট, মোস্ট বেট, লাইভ টি-২০, বেট ৩৬৫, বেট ৩০, বেস্ট অফ উইন ২৪, ইত্যাদী বিভিন্ন নামের অনলাইন মাধ্যমে চালিয়ে যাচ্ছে জুয়া খেলা। জুয়া নিয়ন্ত্রণ কারি বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে জেলায় প্রায় ০৮-১০ হাজার মানুষ অনলাইন জুয়ায় অংশ নেয়। বিকাশ, রকেট, নগদ ও উপায় এর মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে জুয়া চক্রটি।
মেহেরপুরের আলোচিত জুয়ার এজেন্ট মাহফুজুর রহমান ওরফে নবাব ও তার স্ত্রী সিআইডি’র হাতে ধরা পড়ার পর অনলাইন জুয়ার আসর কিছুদিন বন্ধ ছিল। সম্প্রতি নিয়ন্ত্রণের হাতবদল হয়ে আবারও পুরো দমে শুরু হয়েছে জুয়া বানিজ্য।
গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামের আনোয়ার, মেহেরপুর শহরের শেখ পাড়ার সাইদুর রহমান টিটিস, একই পাড়ার সুজন শেখ ও নাসিম, মাদার নামের কয়েকজন মিলে এজন্ট নিয়ে অনলাইন জুয়ার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বিভিন্ন বিকাশ ও নগদ এজেন্টদের সিম ভাড়া নিয়ে টাকা ট্রানজেকশন করে আসছে দির্ঘদিন ধরে।
মেহেরপুর গাড়াডোব গ্রামের আনোয়ার একজন দিন মজুর ছিলো তার দুভাই এখনও দিন মুজুর আছে। কিন্তু আনোয়ার হঠাৎ করে ফুলে ফেঁপে কলা গাজ হয়ে গিয়েছে । গ্রামের ভাঙ্গা ঘর এখন হয়েছে দোতালা ভোবন, ৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনেছে কয়েক বিঘা জমি। গ্রামের লোক আরো জানান আনোয়রকে কয়েকবার পুলিশ খুজতে গ্রামে আসে। এর পরথেকে সে আত্মোগোপন করে বর্তমানে কুষ্টিয়ার ভেড়ামাড়াতে অবস্থান করছে।
মেহেরপুর শহরের নিমতলা হোটেল বাজার মোড়ের এক বিকাশ এজেন্ট বলেন আমার কাছে মোটা টাকায় বিকাশ এজেন্টের সিম ভাড়া নিতে এসেছিলো সাইদুর রহমান ও সুজন নামে দুজন। আমি তাদের দিইনি।
অনলাইন জুয়ার অপর নিয়ন্ত্রক মুজিবনগর উপজেলার কোমরপুর গ্রামের পলাশ ও সোহাগের । একসময় নবাব এর সাথে এদের চলাফেরা ছিল বলে জানা গেছে। সাহেরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মাদার আলী ও তার ছেলে অনিক আলী এই অনলাইন জুয়ার এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে।
মেহেরপুরের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিকেশন ও ডিবি’র এর একটি দল অনলাইন জুয়ায় জড়িত থাকার কারনে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে আটকও করেছে। তবে ধরাছোয়ার বাইরে থাকা একাধিক সাব এজেন্ট এখনো তাদের জুয়া কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
সাইদুর রহমান ওরফে টিটিস এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি যদি জড়িত থাকি তাহলে আপনি নিউজ করেন। আমার নামে মামলা হলে হোক।
সুজন শেখ বলেন, আমার বিরুদ্ধে সড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি এইসব জুয়ার সাথে জড়িত না। একই কথা জানান নাসিম। তিনি বলেন, আমি বিদেশে ছিলাম। আবার যাবো। অনলাইন জুয়া কি আমি জানিই না।
মেহেরপুর সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিকেশন ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি জুলফিকার আলী বলেন, সিআইডির হাতে অনলাইন জুয়ার এজেন্ট হিসেবে জড়িত থাকার জন্য মেহেরপুরের ৯ জন আটক হওয়ার পর অনলাইন জুয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। আমরা ইতিমধ্যে ৩টি সফল অভিযান পরিচালনা করেছি। এতে অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িত থাকায় বেশ কয়েকজন আটক হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। আমাদের তদন্ত অব্যাহত আছে অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।