মেহেরপুর প্রতিনিধি
মেহেরপুর শহরের তাঁতীপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় চার তলা ভবন নির্মাণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা না করার প্রতিবাদ করায় নারী সহ দুেইজনকে পিটিয়েছে ঠিকাদারের শ্রমিকরা। পরে উত্তেজিত জনতা ৬ শ্রমিককে গণ ধোলায় দেয়। রবিবার বিকালে এঘটনায় উভয় পক্ষের ৮ জন আহত হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার কণ্যা রিক্তা খাতুন ও নাতি ইডেন আরাফাত জেহাদ (২০) মারাত্মক আহত হয়েছে। আরাফাতের মাথায় ৮ টি সেলাই হয়েছে। পরে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের এটি দল ঘটনা স্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও এলাকা বাসি জানান, দুই বছর ধরে মেহেরপুর শহরের তাঁতীপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় চার তলা একাডেমিক ভবনের কাজ শুরু করেন ঠিকাদার সালেহ উদ্দিন আবলু। কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে আশেপাশের বসতিরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা করার দাবি করে। তবে ঠিকাদার এই দাবি না শুনে নির্মান কাজ চালাচ্ছিলেন। ঘটনার সময় মুক্তিযোদ্ধা শওকত হোসেনের স্ত্রী ময়না খাতুন রান্না ঘরে রান্না করছিলেন। এসময় উপর থেকে একটি রডের টুকরো রান্না ঘরের টিন ফুটো করে তার পাশে পড়ে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তার নাতি আরাফাত হোসেন প্রতিবাদ করে। এসময় সামিউলসহ কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক হাতে থাকা বেলচা দিয়ে প্রথমে আরাফাতকে ও পরে তার খালা রিক্তাকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। এসময় তাদের চিৎকারে পরিবার ও আশেপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।এসময় উত্তেজিত স্থানীয়রা ৬ নির্মাণ শ্রমিককে গণপিটুনি দেন। খবর পেয়ে ঠিকাদার সালেহ উদ্দিন আবলু ঘটনাস্থলে গেলে তিনিও স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন । পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ মাঝে মধ্যে ইট, বালি ও রডের টুকরা ওপর থেকে নিচে পড়ে। যেকারণে আমরা বার বার নিরাপত্তার ব্যবস্থার জন্য বলেছি । কিন্তু সেটা না দেওয়ায় আজ একটুর জন্য ময়না খাতুন বেঁচে গিয়েছে। ঠিকাদারকে বললে তিনি শুধু হুমকি দেন।
মেহেরপুর পৌরসভা ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ আবু আব্দুল্লাহ বাপ্পি বলেন, কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে আমি বেশ কয়েকবার ঠিকাদারকে বলেছি ভবনের পাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করার জন্য। তিনি কোন গুরত্ব দেননি। যে কারণে আজকের এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যেটা ঠিকাদার মোটেও ঠিক করেননি।
ঠিকাদার সালেহ উদ্দিন আবলু বলেন, কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে একটি পরিবার ডিস্টার্ব করছে। স্থানীয় কাউন্সিলর বাপ্পি চাঁদা চেয়ে না পেয়ে ওই পরিবারকে উস্কে দিয়ে সরকারি কাজে বাধা প্রদান করে আসছে। তিনি আরো বলেন, প্রটেকশন দেওয়ার মত কাজ এখনো শুরু হয়নি,তাই প্রটেকশন দেওয়া হয়নি।
মেহেরপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাকিন আহমদে বলেন, ভবন নির্মানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করার জন্য কোন বরাদ্দ নেই।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি জুলফিকার আলী বলেন, উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছে। বর্তমানে কাজ বন্ধ রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে কাজ চালু করতে বলা হয়েছে। কোন পক্ষই এখনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পূর্ববর্তী খবর