মেহেরপুর প্রতিনিধি:
মেহেরপুরের গাংনীর রাজা ক্লিনিকে বাচেনা খাতুনের পিত্তথলির পাথর অপারেশনের দীর্ঘ ১৯ বছর পর পেটে কাঁচি থাকার ঘটনায় রাজা ক্লিনিকের মালিক পারভিয়াস হোসেন রাজা ও অপারেশন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সার্বিক তদন্ত করার নির্দেশনা দিয়েছে আদালত।
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালত স্বপ্রনোদিত হয়ে মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) অপু সারোয়ারকে ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশ দেন। সেই সাথে ঘটনা তদন্তে সিভিল সার্জন ডাঃ জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকীকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য বলা হয়েছে।
মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) অপু সারোয়ার বলেন,আদালত কর্তৃক ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশনা পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত শেষে দ্রত সময়ের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
এদিকে মেহেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে গত ৫ জানুযারী গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো: আশরাফুজ্জামান লিটনকে প্রধান ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারী মো: ফজলুর রহমান, মেহেরপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক ফয়সাল হারুনকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও ১৫ দিনেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনী।
তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো: আশরাফুজ্জামান লিটন এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকী বলেন,স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সে কমিটির সদস্যরা কিছুটা সময় চেয়েছে। দ্রত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া আদালত থেকে ঘটনা তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য একটি অনুলিপি দেয়া হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
উল্লেখ্য : মেহেরপুরের গাংনীর রাজা ক্লিনিকের মালিক পারভিয়াস হোসেন রাজা,ডা: মিজানুর রহমান ও ডা: তাপস গত ১৯ বছর আগে পিত্তথলির অপারেশন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার নওদা হাপানিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদ এর স্ত্রী বাচেনা খাতুনের। অপারেশন করার পর দিন দিন বাচেঁনা খাতুনের পেটের যন্ত্রনা বাড়তেই থাকে। পেটের ব্যথার অসহ্য যন্ত্রনায় বছরের পর বছর বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে ছুটেছেন তিনি। চিকিৎসা করাতে গিয়ে শেষ সম্বল ১০ কাঠা জমি বিক্রি সহ খুইয়েছেন অর্থ সম্পদ সব কিছু তবুও ভালো হয়নি। শেষ পর্যন্ত যন্ত্রনা সইতে না পেরে গত ২রা জানুয়ারী রাজশাহী মেডিকেল কলেজের নিউরোমেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ রেজা নাসিমের কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে তার পরামর্শে এক্স-রে করানো হয়। এক্স-রে রিপোর্টে পেটের মধ্যে ৪/৫ ইঞ্চি’র একটি কাঁচির সন্ধান মেলে। এরপর গত ১০ জানুয়ারী চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারী মো: ওয়ালিউর রহমান নয়ন অপারেশনের মাধ্যমে বাচেনা খাতুনের পেট থেকে কাঁচি বের করে। বর্তমানে বাঁচেনা খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
পূর্ববর্তী খবর