মেহেরপুর প্রতিনিধি:
মেহেরপুর মডেল মসজিদের সম্মুখভাগে স্থাপনা ও দোকানপাট অপসারণ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করেছেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান লিখিত বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন মেহেরপুর জেলার সদর উপজেলাধীন বামন পাড়া মৌজা আরএস ২১৬৫ নং খতিয়ানে মেহেরপুর কোর্ট মসজিদের পক্ষে সেক্রেটারি নামে ২৫২৪ দাগের ০.৫৮১৩ একর জমি মসজিদের শ্রেণীভূক্ত। উপযুক্ত জমিতে ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী মেহেরপুর কোর্ট জামে মসজিদ। সময়ের পরিক্রমায় মসজিদের গুরুত্ব বেড়ে যাওয়া এবং সম্মুখভাগে বর্তমানে মসজিদের পার্শ্ববর্তী ১ নং খাস খতিয়ান ভুক্ত বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ডেপুটি কমিশনার মেহেরপুরের অধীনের ২৫২৪ দাগের ০.৮৩০৬ একর কোর্ট মসজিদ শ্রেণীভূক্ত জমিতে অনানুষ্ঠানিক আলোচনার ভিত্তিতে বেশ কয়েক বছর আগে মসজিদের উন্নয়নের স্বার্থে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা ও দোকানপাট গড়ে ওঠে। উক্ত দোকানপাট অত্র এলাকার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোকের জীবন-জীবিকার সংস্থানসহ মেহেরপুর জেলার ব্যবসা-বাণিজ্য তথা দেশের জিডিপিতে রেখেছে উল্লেখযোগ্য অবদান। সম্মানিত দোকানদার /ব্যবসায়ীগন মসজিদ কমিটিকেও সময় সময় অর্থসংস্থান করে মসজিদের উন্নয়ন সাধনের অবদান রেখেছেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, ঐতিহ্যবাহী মসজিদ গুরুত্ব অনুধাবন করে ২০১৮ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বর্তমান মসজিদের পার্শ্ববর্তী ১ নম্বর খাস খতিয়ান ভুক্ত জমিতে দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ইতোমধ্যে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের প্রায় ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং সার্বিক প্রস্তুতি শেষে খুব শীঘ্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক শুভ উদ্বোধন করার জন্য নির্ধারিত আছে।
আনুষ্ঠানিক বরাদ্দ ছাড়াই শুধুমাত্র অনআনুষ্ঠানিক আলোচনার ভিত্তিতে সরকারের ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত জমিতে গড়ে ওঠা স্থাপনা অপসারণের লক্ষ্যে এবং নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের পারিপার্শ্বিক ভাবগাম্ভীর্য পবিত্রতা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিতে প্রকল্পের আওতায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণের বাধ্যবাধকতা থাকার প্রেক্ষিতে বর্তমান সরকার জমিতে অস্থায়ী ভাবে গড়ে ওঠা দোকানপাট ও স্থাপনাসমূহ অপারেশন করা অত্যাবশ্যক দেখা দিয়েছে। সে লক্ষে দ্যা গভর্মেন্ট এন্ড লোকাল অথরিটি ল্যান্ড এন্ড বিল্ডিংস (রিকভারি অফ পজিশন) অর্ডিন্যান্স ১৯৭০ এর বিধান মতে গত ২০/২৯/২০২২ তারিখের সম্মানিত দোকানদার ব্যবসায়ীগণ কে নোটিশ করা হয়েছে।
তাছাড়া সম্মানিত দোকানদার ব্যবসায়ীগণ কে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিকভাবেও অবহিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে ১৮/৫/২০২২ উচ্ছেদ কার্যক্রম গ্রহণ করলে সম্মানিত দোকানদারও ব্যবসায়ীগন সময় নেয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিজ উদ্যোগে কোন দোকান স্থাপনা অপসারন করেননি।
তাছাড়া, উচ্ছেদ পরবর্তী সময়ে সম্মানিত দোকানদার ব্যবসায়ীগণ কে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে মসজিদের মালিকানায় অন্য স্থানে অথবা জেলা পরিষদের পার্শ্ববর্তী জায়গায় দোকানপাট স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে জেলা পরিষদের সম্মানিত প্রশাসক এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সাথে একাধিকবার আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু খাস জমিতে গড়ে ওঠে স্থাপনা উচ্ছেদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে সেহেতু আজ ৭/৬/২০২৩ আনুষ্ঠানিকভাবে দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়।
তিনি বলেন যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে। ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুল হুদা, লিংকন বিশ্বাস, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুজ্জামান ভূঁইয়া সহ স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পূর্ববর্তী খবর